চলার পথে ইসলাম। কিভাবে আমাদের সাথে ..
আজকের বিষয় : চলার পথে ইসলামী জনগোষ্টি বিশেষ করে যারা
বাংলাদেশে বাস করে তাদের চরিত্র ও তাদের ইসলাম কেমন ? তারই কিছু চিত্র ;
বর্তমানে ২০১৫ সালে আমাদের দেশের সামাজিক ,অর্থনৈতিক,
রাজনৈতিক, ও ধর্মীয় অবস্থান বেশ খারাপ এবং অতীতেও ছিল। দেশের সাধারন মানুষের জীবনের কোন মুল্যই যেন
নেই , কোন সমাজপতির কাছে, কোন ধনীর কাছে, কোন রাজনৈতিক নেতার কাছে, না কোন ধর্মীয় নেতার
কাছে। যখন কোন মানুষকে মারা হয় , যেমন গুম , হত্যা ইত্যাদি তখন যাকে দিয়ে করানো হয়
কাকে যে পরিমান টাকা দেওয়া হয়, তাই তার মুল্য। যেমন সাধারণ মানুষ হলে , বিনা টাকায়
বা শুধু উপরওয়ালার সন্তুষ্টি করার জন্য, বিশেষ মানুষ হলে, তার পদ-র্যাংক এর উপর নির্ভর
করে , তার দাম কত।? আর কোন বি্লডিং ভেঙ্গে মানুষ মরলে ২০হাজার। রাজনিতির মিছিলে ০০-৫০
হাজার ,এখানে গুরত্বপুর্ন মানুষ হারে হিসাব হয়। হরতালে মরলে চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিন্তু দেশের নেতা
মরলে বা তার বিচার এর সময় তার জন্য হাজার জন মানুষ মরে। কিন্তু যে মারে সে বলে , দেশের
মঙ্গলের জন্য , দেশের শান্তির জন্য গুলি করছি। তাতে মরছে সন্ত্রাসী, সাধারন মানুষের
নিরাপত্তার ও শান্তির জন্য ।
আর যাদের জন্য মরছে, তারা বলছে আমরা তোমাদের কল্যাণের
এই ত্যাগ, একদিন এই ত্যাগই তোমাদের কল্যান হবে। কিন্তু যারা নিয়ন্ত্র করছে এই দুই পক্ষ তাদের কেহ কোন ত্যাগ করেছে। আবার তারাই
এর সব থেকে সুফল ভোগ করছে।
তাদের কাছে আজ সাধারন মানুষ হচ্ছে একটা উপাদান, এটা
এমন এক উপাদান যাকে বহুমুখী ব্যবহার হিসাবে ব্যবহার উপযোগী । কখনো উৎপাদনের উপাদান,
কখনো ক্ষমতা লাভের উপাদান, কখনো মহান হওয়ার উপাদান। আপনি এই অতি ব্যবহার যোগ্য উপাদানকে
ব্যবহার করার জন্য সেই ভাবে ব্যবহার করা , এবং সেই ভাবে গড়ে তোলা দরকার । আজ যেনে এই
উপাদন সংগ্রহ গড়ের তোলা প্রতিযোগিতাই কতিপয়
গোষ্টি কাজ করছে । সেখানে আধুনিক পন্থায় পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে, সেখানে কাজের
শ্রেনী বিন্যস করা হয়েছে, যেমন কোন ফ্যাক্টারি তে কোন কাচামাল ঢুকালে তার তার নির্দিষ্ট
প্রডাক্টে রুপান্তরিত হবে। তেমনি ভাবে কোন দেশে জন্ম নিলেই সেই নিয়মেই সেই উপাদান তৈরী হবে। কেহ বলবেন এক মানুষ
তবে কিভাবে তার থেকে পরিত্রান পাবে । কিভাবে সমস্যার সমাধান করবেন…
আসুন দেখি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ফ্যাক্টেরি কেমন ?
আসুন দেখি বাংলাদেশের ধর্ম ফ্যাক্টেরি কেমন ?
আসলেই তারা যেভাবে ইসলাম ধর্ম মানে তাকি সত্যই ইসলাম
ধর্মালম্বী বলা যায় কিনা , তার বিচার পাঠকের হাতে। বর্তমান ২০১৫ সালের যারা নিজেদের
মুসলমান হিসাবে দাবি করি তারা সম্ভবত ১% এর ও কম ধর্মান্তরিত মুসলমান, আর বাকী ৯৯%
মুসলমানই জন্মগত ভাবে মুসলমান। এদের কাছে সত্যিকার অর্থে ইসলাম কি ? এবং মুসলমানের
প্রকৃত সংজ্ঞা কি ? তা নিয়ে কোন মুসলিম এর
কোন কোন ধারণা নেই। আর যার আছে, এই বিষয়ে জানা আছে, তার ব্যবহারে বোঝা যায় না সে তা
জানে।
এখন আপনি বলতে পারেন, যে জানে সে কি বলে বেড়াবে আমি
সত্যি বিষয় জানি, আমি সত্যিকার মুসলিম। এটা যদি কেহ করে , সবাই তাকে পাগল বলবে , এমকি
আমিও তাকে বদ্ধ পাগল বলবো। যদিও আমার গ্রামের লোক আমাকে পাগল বলে। তাহলে আমিই বা কিভাবে
বলছি কোন মুসলিম এর ধারনা নেই। তার পিছনে আমার কিছু যুক্তি আছে, সেগুলো দেখলে, আশা করি আপনিও আমার সাথে এক মত হবেন।
প্রথম যুক্তি:
ইসলামের বানী আসার আগে, মানুষ কি আচরন করতো। তারা সমাজের
কিছু বিধান ও তার পুর্বপুরুষদের যে রীতি , তা মেন চলতো। যে তা করতো না, অথবা যে ঐ সমাজের
ভুল গুলোকে বলতো ভুল। তোমরা এই গুলো করা থেকে বিরত থাকো ।সে কি, এই যে তাদের ধর্মে
অনুসরী থাকতো কি? ..
অবশ্যই নয়। কারন যে ব্যাক্তি কোন ধর্মের , এমন প্রথা
ও কাজ যা তারা নিয়মিত করে , ঐ সকল কাজ গুলোকে যদি বলে এই সকল কাজ অবশ্যই বাদ দেওয়া
দরকার , তাকে কি ওই ধর্মের অনুসরী বলবেন ? তাই যদি বলেন, তবে মোহাম্মদকেও বলতে হবে
তিনিও তার পুর্বপুরুষের ধর্ম পালন করেছেন, কিছু সংস্কার এর মাধ্যমে । নাওয়ুযুবিল্লাহ
! আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করুন। মোহাম্মদ তা কখনোই করেন নি ।
কিন্তু আমরা
আমাদের ধর্মকে অন্যর সাথে কম্প্রমাইজ করছি। আমরা বলি আমি মুসলিম, আবার চাকুরির জন্য
ঘুস দিই। আমি মুসলিম বোকা লোক পেলেই , পাইছি আজকে । আমি মুসলিম , আমার রোগ মুক্তির
জন্য মান্যত করি। আমি মুসলিম নেওয়ার সময় বেশি নিই, দেওয়ার সময় কখনোই বেশি দেই না। আমি
মুসলিম দান করি, কিন্তু মানুষের হক ফাকি দেই। আমি মুসলিম , পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়
করি, আমি আমার প্রতিবেশির পথ নাপাকিতে ছড়াই দেই। আমি মুসলিম আমি আমার জায়গাতে ডাস্টবিন খোলা রাখি তাতে কার কি। আমি মুসলিম, আমার নিজের
ক্ষমতা রাখতে গিয়ে, আমার গ্রাম তথা দেশের সকল সাধারণ মানুষের ক্ষমতা এক দানবের হাতে
সমর্পন করি, যে আমার ভাইয়ে হত্যা করে। আমি মুসলিম, আমি ধর্মের নামে আমার আয়ের লাভজনক
ব্যবসা করি। আমি মুসলিম, সমাজে ইসলাম এর জন্য মসজিত নির্মান করি, কারন আমি ঐ মুসলিম
থেকে নিজিকে সুরক্ষিত মনে করি না। আমি মুসলিম মসজিত নির্মানের জন্য হাজার টাকা ব্যয়
করতে পারি , কিন্তু আমারই এক মুসলিম ভাই ঋীণের জন্য পেরেশান , তাকে ঋীণ মুক্ত করতে
পারি না। আমি মুসলিম, আমি কেহ চুরি করলে তার হাত কাটতে, হাতে পেরেক মারতে পারি, বিন্তু
তার আভাব এর জন্য সহজগিতা বা কেন চুরি করল তার সমাধান করার মত সময় নেই। আমি মুসলিম,
কেহ জিনা করলে , তাকে হত্যা বা সমাজ চুত্যি করতে পারি , জেলে দিতে পারি, জরিমানা করতে
পারি, তাকে সঠিক পথ দেখাতে পারি না। আমি মুসলিম, আমি আমার সন্তানের জন্য লাক্ষ্ লাক্ষ্
টাকা ব্যয় করে বড় বড় ডিগ্রী দিতে পারি, কিন্তু তাকে কোরাানের গবেষক বানাতে পারিনা।
আমি মুসলিম , আমি আল্লাহকে ভালোবসি, কিন্তু
আল্লাহকে চিনতে চাই না। আমি মুসলিম, আমি আল্লাহর কথা মানি , কিন্তু আল্লাহ কি বলেছেন
, তা জানি না। তাহলে আমি মহান মুসলিম আমার
ধর্ম সর্স্পকে কেহ কিছু বল্লে আমি তাকে চড় মারতে পারি, কিন্তু আমার আল্লাহ সম্পর্কে
কিছু বলতে পারি না।
আজ
আমাদের দেশ মুসলিম প্রধান দেশ হলেও একজন বিধর্মী যত ভালো ভাবে বাসকরেত পারে বা পারবে।
কিন্তু একজন সত্যিকারের মুসলিম এটাদিনও ঐরকম ভাবে বাচতে পারবে না। তার কারন কি?
কারন আমরা সতিই মুসলিম না। আমার নাম: ‘মোহাম্মদ আশাদুল হক মৃধা’ নামটা মুসলিম
হলেও এখনো পযর্ন্ত মুসলিম হতে পারি নাই। আমি এই বিশ্বাস নিয়ে কাজ করি ,ও আল্লাহর কাছে
বলি আমি যেন একদিনের জন্য হলেও পৃথিবী সকল মোহ ত্যাগ করে , আমার ইচ্ছাকে আল্লাহর কাছে
দিয়ে মুসলিম হতে পারি। আল্লাহ আমার অতীতে সকল গুণাহ মাফ করে যেন মুসলিম হিসাবে গ্রহন
করেন । এই ছাড়া আর কোন কামনা আল্লাহর কাছে নেই।
দ্বিতীয় যুক্তি: আমরা যারা নিজেদের মুসলিম বলি, তারা
সাধারণত ভাবি, আমি মুসলিম কারণ আমি নামাজ পড়ি , রোজা রাখি, সাধ্য মত দান করি, ইসলামের
নিয়মনীতি পালন করি , তবে তো আমাকে মুসলিম বলে পরিচয় দেব না তো কাকে মুসলিম বলবো ! কিন্তু
আমি যখন ক্ষতিগ্রস্থ হই, বা ন্যয় কথা বলতে গেলে ভয় পাই, সত্য জানার পরেও তাকে প্রকাশ্য
বলতে পারি না। চখের সামনে কেহ লঞ্চিত হলে কিছু করতে পারি না। অফিস আদালতে গেলে দুর্নিতির
শিকার হই , তখন মুখ বুজে চলে আসি। আবার সমাজের প্রভাবশালী লোক অন্যায় করলে চুপ থাকি,
কিন্তু সাইকেল চোর পেলে তাকে পেটাতে পারি। ইমাম সাহেব কথা বল্লে চোখ বুজে মেনে নিতে
পারি কোন যুক্তি ছাড়াই । কিন্তু স্বাধারণ মানুষ যখন যুক্তি দেখিয়ে সত্য বলে, তাকে বলি
পাগলের প্রলাপ । তাকে সমাজের বিষ ফোড়া মনে করি, তাই যদি মনে করতে হয় , তবে মোহাম্মদ
ছিল পৃথিবীর সবথেকে বড় বিষ ফোড়া । যে মোহাম্মদ এর শান্তির বাণী ছিল কাফের সমপ্রদায়ের
বিষ ফোড়া । নিজেদের চরিত্রকে একবার চিনতে চেষ্টা করুন , আমি বা আপনি সেই কাফেরের মত
আচরন করছি না তো। যদি মনে করেন আপনি সঠিক পথে রয়েছেন তবে বিচার এর ভার আপনার হাতে,
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেছেন,’ তোমাদের কাছে কোন মাতাল সংবাদ আনায়ন
করে তবে তা পরিক্ষা করে দেখবে’। কিন্তু
আপনাদের চরিত্র সেই আল্লাহর কথা কি আনুসরন করেন নাকি শইতানের পথ অনুসরন করেন ।
আমাদের সমাজে যে মুসলিম তাদের যখন
বলি, আমি বা আমার বংশধরা মুসলিম কিনা সন্দেহ আছে, তখন তারা বলে, আমি এত পরিমান ওদ্ধত
হয়ে গেছি যে ‘আমার মুসলিম জাতির বা আমার বংশের তথা যারা জন্মগত মুসলিম তাদের অসম্মান করছি । ইসলামের
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন