আমার মনে হয় আমরা সকলেই জানি মানুষ মাত্রই
ভুল করে থাকে। যদি কেহ আমরা ভুল না করি তবে আমরা মহা মানব । যা স্বাধারণ মানুষের
সাথে তুলনিও নয়। আর মানুষ যার প্রলোভনে সত্য থেকে দুরে থাকে , তাকে আমরা ইবলিশ বলি। ইবলিশ
শব্দ বলতে যে খারপ কাজ করে এবং খারাপ কাজ করতে উৎসাহিত করে/প্রেরণা যুগায়।
কিন্তু আমি ইবলিশকে দেখি নাই। ইসলামে আছে , আল্লাহ ঐ
ফেরেস্তাকে ইবলিশ বলেছেন, যে আল্লাহর কথা অমান্য করে পথ চলে।
কিন্তু প্রকৃত যুক্তি ও সত্য কি আমাদের এই ধারণাই দেয়। আসলে আল্লাহ কে বিশ্বাস করে
কেহ যদি মনে করে, যে তিনি আল্লাহকে ধন্য করেছে, তবে সেই
প্রকৃত নির্বোধ। যদি আপনি মেনে নেন, তাহলে, ইবলিশ যদি মনে করেন, তিনি আল্লাহকে
বিশ্বাস করেই, আল্লাহকেই ধন্য করেছেন! কিন্তু প্রকৃত পক্ষে কি তাই?
তবে আমরা যদি মনে করি যে, ”আমি আল্লাহকে
বিশ্বাস করে আল্লাহকেই ধন্য করলাম বা মুসলিম জাতিকে ধন্য করলাম,(যারা আল্লাহ কে
বিশ্বাস করে)”। তাহলে কি আল্লাহর কি কোন উপকার হবে? আর না করলে আল্লাহর কি কোন
ক্ষতি হবে? আল্লাহর কিছুই করার ক্ষমতা মানুষের নেই, কিন্তু আল্লাহ সবকিছুই করতে
পারেন।
তাহলে দেখুন কোরআনের কোথাও লেখা নেই যে,
ইবলিশ আল্লাহকে বিশ্বাস করে না। মুলত: তার ইবলিশ হওয়ার পেছনে যে কারন, তা হলো
মানবের কল্যাণে জন্য, তার কাজ করার অস্বীকৃতি জানানো অথবা তার উদ্দেশ্যে সেজদা না
করা।
এখানে সেজদা একটি রুপক প্রতিক। এর জন্য আমার
যুক্তি হলো: প্রথমে ধর্ম নেই মনে করুন। তারপর আপনাকে যদি , বলা হয় সেজদা করতে
তো আপনি কাকে কাকে সেজদা করতে বলবেন। হয়তো ,প্রথমে সেজদা করবেন, যে আপনাকে জন্ম
দিয়েছে, যে আপনার মালিক বা যে আপনাকে বেচে থাকার উপকরণ দিয়ে বাচিয়ে রেখেছে। পৃথিবীর ইতিহাস বলে মানুষ মানুষের কাছে, রাজা
এবং মালিক এর কাছে , প্রজা এবং দাসরা সেজদা করেছে। তাহলে কেন তারা সেজদা করতো,
কারন দাসকে ক্রয় করে নিয়ে তার সকল ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব মালিকরা নিয়ে নিত। এবং
তদ্ব-অনুসারে মালিকের কল্যাণের জন্য দাস নিয়োজিত থাকত সর্বদা। কিন্তু সেই তুলনাই দাসের কল্যানে মালিক নিয়োজিত হত
কি?
সমাজ ব্যবস্থার প্রতিটি ক্ষেত্রে একশ্রেণী
অন্য শেণীর কাছে দাস হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে। ফেরাউন যেমন নিজেকে স্রষ্টা বা তাদের
দেবতা হিসাবে নিজেকে দাবি করতো । তেমনি অন্যরা তাকে দেবতার মত পুজা ও প্রর্থনা
করত। আর মিসরীদের সকল ভালো মন্দ দেখার প্রধান দায়িত্বে থাকতেন রাজা। কিন্তু যারা
মিসরী নই, তাদেরকে পশুর চেয়েও নির্মম ভাবে ব্যবহার করা হত।
কিন্তু স্রষ্টা ও সৃষ্টির ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম
হয়। কারণ আমরা যেমন , কোন কিছু সৃষ্টি করি তখন তার জন্য সব পরিশ্রম ব্যয় করি, তার
ভালোমন্দ গুলো বিচার করি এবং সেই অনুযায়ী তার জন্য কি ভালো তার ব্যবস্থা করে থাকি
।তাহলে কি দাড়ালো ? সকল ফেরেস্তাকে মানুষ সৃষ্টির পর মানুষের কল্যাণের জন্য
নিয়োজিত করা হলো আর তার মধ্যে সকলে মেনে নিলো, কিন্তু ইবলিশ মেনে নেয়নি। যার জন্য
সে আল্লাহর কথার অবাধ্যত্বা করল, এবং যার
ফলে সেই নিজে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তরভুক্ত হল।
তাই যে আল্লাহকে অবিশ্বাস করল, এবং অমান্য
করল, সে বরং নিজেই ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তরভুক্ত হল।
কারণ আল্লাহ তার পরিচয়ে বলেছেন, আমি অমুখাপেক্ষী, (অর্থাৎ তার কোন ক্ষতি বা মঙ্গল করার ক্ষমতা কোন কিছুরই নেই।)। তহলে ইবলিশ বিশ্বাস করলেও এবং না করলেও তাতে স্রষ্টার কোন ক্ষতি হয় না।
কিন্তু যাকে নাম দেওয়া হয়েছে, তাতে পবিত্র কোরআনের সুরা
বাকারার ৩০নং আয়াতে যে কারণে তাকে ইবলিশ বলা হয়েছে , তা
মানুষের উদ্দেশে সিজদার কারনে। তাহলে সকল ফেরেস্তা মানুষের উদ্দেশে সিজদা করল, মানে ফেরেস্তাকে মানুষের কল্যাণের জন্য পরিচালনা। সকলেই মানুষের কল্যাণের উদ্দেশ্যে কাজ করছে, কিন্তু
একজন ব্যতিত। তাকেই আমরা ইবলিশ বলি। কিন্তু ফেরেস্তা সম্পর্কে যে জ্ঞান আমাদের
আছে, তার দ্বারা তাকে দেখা বা প্রতিহত করা অনেক কষ্টকর। আবার ফেরেস্তারাও আমাদের
সাথে বসবাসের বা চলাফেরার অনুমতি নেই। তারা সরাসরি আমাদের কোন ক্ষতি করতে পারে
না।আল্লাহর হুকুম ব্যতিত।
কিন্তু আল্লাহ এবং তার রাসুলের মাধ্যমে
জানিয়েছেন কোন কোন কাজের মাধ্যমে মানুষ ইবলিশের কাজ গুলো করে। এবং তা অপরকে করাই।
সৎ কাজ থেকে দুরে থাকা, মানব জাতির অকল্যাণে কাজ করা, আল্লাহকে অবিশ্বাস করা ও তার
অনুগ্রহকে অস্বীকার করা। এখন আপনারা মনে করতে পারেন আমি কেন? , নামাজ বা
প্রার্থনাকে বাদ দিলাম। এবাদত অবশ্যই বাধ্যত্বামুলক। তার মধ্যে নামাজ একটি প্রধান
এবং ফরজ। কিন্তু একটু লক্ষ করেছেন কি? ইবলিশ কিন্তু এবাদত করতো, কিন্তু তার এবাদত তার কোন কাজে আসেনি। কারন সে আল্লাহর অনুগ্রহকে অস্বীকার করেছ, এবং আল্লাহর আদেশ
পালন করেনি। তদ্ব্রুরুপ আমরাও যদি ইবলিশেরই পদানাঙ্ক অনুসরন করে চলি, তবে আমাদের
দশাও এই ইবলিশের মতনই হবে।
আমাদের যেন এই রকমের অবস্থাই না পতিত হতে হয়। যেদিন সবকিছু প্রকাশ হয়ে যাবে,
সেদিন যদি আমরা আবার অনুসূচনা করি , তা কোনই কাজে আসবে না। এই জন্য আল্লাহ এই
ব্যপারে সুনির্দিষ্ট মত প্রকাশ করেছেন।
যদি আপনি দেখতেন যখন অপরাধীরা তাদের
পালনকর্তার সামনে নতশির হয়ে বলবে, হে আমাদের পালনকর্তা, আমরা দেখলাম ও শ্রবণ করলাম। এখন আমাদেরকে পাঠিয়ে দিন, আমরা সৎকর্ম করব। আমরা দৃঢ়বিশ্বাসী হয়ে
গেছি।(সুরা: আস্-সাজদা ,আয়াত:১২)
আমি যা বল্লাম তা আমার কথা নয় , এটা আল্লাহর-ই কথা। আমি শুধু আমার মত প্রকাশ করছি। আমি যদি কোন কিছু ভুল ব্যাখ্যা করি তবে, তার ফল আমার উপরেই বর্তাবে।
সুতরাং
আমার কথা আগে বিচার করুন এবং আল্লাহ তার যে পবিত্র গ্রন্থ দান করেছেন , তার সাথে
মিলিয়ে দেখুন , যদি না মেলে তা বাদ দিন, এবং আমাকে জানান। কারন মানুষ নিজের ভালোর
জন্য সব সময়, খারাপটা দেখতে পারে না।
মুমিনগণ! যদি কোন পাপাচারী ব্যক্তি তোমাদের কাছে কোন সংবাদ আনয়ন করে, তবে তোমরা পরীক্ষা করে দেখবে, যাতে অজ্ঞতাবশতঃ তোমরা কোন সম্প্রদায়ের ক্ষতিসাধনে প্রবৃত্ত না হও এবং পরে নিজেদের কৃতকর্মের জন্যে অনুতপ্ত না হও। (৪৯.আল-হুজরাত, আয়াত:৬)
এই আয়াতে যারা মুমিন তাদের উদ্দেশে বলা হয়েছে, যখন কোন মানুষ কোন সংবাদ নিয়ে আসে তখন আমাদের সমাজের নাম ধারী মুমিনগণ এর বিপরীত কাজ করে। তারা সব সময় সমাজের সম্মানিত মানুষের কথাকে প্রধান্য দেয় । তারা আসলে তাদের মঙ্গল করছে না , ক্ষতি করছে তা তাদের বিবেচনা করার মত অন্তর তাদের তাকে না। তারা শুধু নিজেদের নিয়ে
ব্যস্ত, নিজের কতটা লাভ হলো তাই চিন্তা করে পেরেশান, কিন্তু যারা সকলের কথা নিয়ে
ভাবে ও চিন্তা করে এবং সৎ কর্ম সম্পাদন করে , তাদের কে তারা বোকা ও নির্বোধ মনে
করে। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে তারাই বোকা কিন্তু তারা তা অনুধাবন করতে পারে না। আচ্ছা
যে তার ভাই এর হক বঞ্চিত হবে মনে করে কোন কাজ করল না, সে অপেক্ষা যে ব্যাক্তি এমন
কাজ করলো যা তাদের পুরা জাতিকে বঞ্চিত করল এবং সেখানে তার আপনজনেরাও বাস করে।
আর যে মুলত মানব জাতির ক্ষতি সাধনে নিয়োজিত, সেই আমার কাছে ইবলিশ।
আমরা দেখি সমাজে যে
মানুষ ঠকিয়ে বেশি আয় করতে পারে সেই বুদ্ধিমান।
যারা ভাবে আমি কিই বা করতে পারি ?
আমি এবং আপনি সবাই মনে করি আমি তো কারো ক্ষতি করি না। আমি সময় মত নামাজ- রোজা, ও ধর্মিও অনুষ্ঠান গুলো পালর করে থাকি! কিন্তু আমরা কি
আমাদের সম্পুর্ণ জীবনবিধান সম্পর্কে জানি ? কি ভাবে আল্লাহ আমাদের জীবন চালতে বলেছেন
? আমরা আমাদের নিজেদের সম্পর্কেও জানি না, আবার কেমন করে স্রষ্টা আমাদের চলতে বলেছেন
তাও জানি না।
আমরা যখন সমাজের
দ্বারা, রাজনীতি দ্বারা, মিথ্যাচার দ্বারা, দুর্নিতির দ্বারা, ও অর্থনিতিক ব্যবস্থার
দ্বার নিজেরা প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ ও যন্ত্রনার শিকার তখন, আমরা বলি...
সততার কথা, সুদ-ঘুষ, অত্যাচার-নির্য়াতন,
শোষণ-নিপীড়ন, গুম-হত্যা, ধর্ষণ, সন্ত্রাস-চাঁদাবাজী, ইত্যাদির কথা। আমরা আরো সুন্দর
করে বলি কোন রাজনৈতিক নেতার জন্য আজ মিছিল হল।
সরকার বাজার ব্যবস্থার দুর্নিতি কত সহজে এড়িয়ে যায়। চাষী কিভাবে এবং কেমন করে
তাদের ন্যয্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হয়। যারা সমাজের নেতা হয়, তারা কোন ক্ষাতের টাকা অত্মস্বাদ
করে ধনী হয়েছে। তা চায়ের দোকানে গেলেই সব তথ্য পাওয়া যাই। আমার দেশের সরকারের কানে
যায় না, অনেক টাকা বেতন দিয়ে রাখা সরকারি কর্মকরতা এই তথ্য গুলো পাই না। আর কোনদিন
পাবে বলেও আশা হয় না। কারন তারও যেন প্রতিযোগিতাই নেমেছে কত পদ্ধিতি রয়েছে বেশি করে
টাকা পাওয়ার, এ বলে টাকা পেলে কুকুরের মাংস ছাগলের মাংস, ও বলে আমাকে টাকা দিলে তো
আমি হরিণের মাংস বলে চালাতাম।
অতঃপর
তোমাদের উপর শোকের পর শান্তি অবতীর্ণ করলেন, যা ছিল তন্দ্রার মত। সে
তন্দ্রায় তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ ঝিমোচ্ছিল আর কেউ কেউ প্রাণের ভয়ে ভাবছিল। আল্লাহ
সম্পর্কে তাদের মিথ্যা ধারণা হচ্ছিল মুর্খদের মত। তারা
বলছিল আমাদের হাতে কি কিছুই করার নেই? তুমি বল, সবকিছুই আল্লাহর হাতে। তারা
যা কিছু মনে লুকিয়ে রাখে-তোমার নিকট প্রকাশ করে না সে সবও। তারা
বলে আমাদের হাতে যদি কিছু করার থাকতো, তাহলে আমরা এখানে নিহত হতাম না। তুমি
বল, তোমরা যদি নিজেদের ঘরেও থাকতে তবুও তারা অবশ্যই বেরিয়ে আসত নিজেদের অবস্থান থেকে যাদের মৃত্যু লিখে দেয়া হয়েছে। তোমাদের
বুকে যা রয়েছে তার পরীক্ষা করা ছিল আল্লাহর ইচ্ছা, আর তোমাদের অন্তরে যা কিছু রয়েছে তা পরিষ্কার করা ছিল তাঁর কাম্য। আল্লাহ
মনের গোপন বিষয় জানেন। (154)
এই বই
শুধু তথ্যই দেবে না। এখানে যথাসাধ্য কি
সমস্যা , তার সুনির্দিষ্টভাবে ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়েছে এবং তার সমাধান দেওয়া
হয়েছে।
§ «: কেন এই
বিষয় আমাদের জন্য বিশেষভাবে প্রয়োজন ও তার সমাধান প্রয়োজন ?
১. কে
ইবলিশ এবং কে আমাদের ইবলিশের পথে নিয়ে যাচ্ছে ?
১.১ কেন
ইবলিশ এর কাজ আমাদের পরিহার করা প্রয়োজন ?
১.২ কারা এই শ্রেণীর লোক, এবং তাদের সাথে কিরুপ
ব্যবহার করা উচিৎ ?
২. কিভাবে
আমাদের ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত করছে ?
৩. কেন
আমরা এর থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করা উচিৎ ?
৪. কিভাবে
এই সমস্যার সমাধান করতে পারি ?
৪.১ :
জ্ঞান এর মাধ্যমে সমস্যা বিশ্লেষণ ও সমাধান ।
৪.২ : ধর্মের
মাধ্যমে কিভাবে সমস্যা বিশ্লেষণ ও সমাধান ।
কেন এই বিষয় আমাদের জন্য
বিশেষভাবে ও তার সমাধান প্রয়োজন ?
এতো বিষয় থাকতে, কেন?, আমি এই বিষয়ে লেখার প্রয়োজন মনে করলাম।
আমাদের বর্তমান বাংলাদেশে যে সমাজ ব্যবস্থা রয়েছে তা, দরিদ্রকে করছে আরো দরিদ্র, ধনীকে
করছে আরো ধনী। যেখানে আজ মানুষ কিছু মাত্র সামান্য সম্পদ ও অর্থের জন্য তার সম্প্রদায়কে
করছে লাঞ্চিত ও বঞ্চিত। যেখানে মানুষ চরম নিচু ও বরবর জীবন বেছে নিয়েছে। যাদের রয়েছে
এমন এক বিরাট সম্মান্বিত গ্রন্থ যা পৃথিবীর কম জাতির কাছেই আছে। তবুও তাদের বেশির ভাগ
মানুষই আজ রয়েছে ক্ষতির মধ্যে। শুধুমাত্র পরোকালে নয়, পৃথিবীর শান্তি থেকেও তারা আজ
বঞ্চিত। তারা ভুলে গেছে, যে তারা মানুষ। তারা আজ পশুর কাতারে নাম লিখিয়েছে, আর কোন পশু কি কোন দিন প্রতিনিধিত্ব
করতে পারে। আর আল্লাহ মানুষকে পৃথিবীবে প্রতিনিধিত্ব করতে এবং আল্লাহর দাসত্ব ও পবিত্রতা
ঘোষনা করতে পাঠিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে স্পষ্ট ভাষায় আল্লাহ-তালা বলেছেন,
” وَإِذْ قَالَ
رَبُّكَ لِلْمَلَائِكَةِ إِنِّي جَاعِلٌ فِي الْأَرْضِ خَلِيفَةً ۖ قَالُوا
أَتَجْعَلُ فِيهَا مَن يُفْسِدُ فِيهَا وَيَسْفِكُ الدِّمَاءَ وَنَحْنُ نُسَبِّحُ
بِحَمْدِكَ وَنُقَدِّسُ لَكَ ۖ قَالَ إِنِّي
أَعْلَمُ مَا لَا تَعْلَمُونَ [٢:٣٠]
আর
তোমার পালনকর্তা যখন ফেরেশতাদিগকে বললেনঃ আমি পৃথিবীতে একজন প্রতিনিধি বানাতে
যাচ্ছি,
তখন ফেরেশতাগণ বলল, তুমি কি পৃথিবীতে এমন
কাউকে সৃষ্টি করবে যে দাঙ্গা-হাঙ্গামার সৃষ্টি করবে এবং রক্তপাত ঘটাবে? অথচ আমরা নিয়ত তোমার গুণকীর্তন করছি এবং তোমার পবিত্র সত্তাকে স্মরণ
করছি। তিনি বললেন, নিঃসন্দেহে আমি জানি, যা তোমরা জান না।(সুরা:বাকারা, আয়াত:৩০)
যেখানে আমাদের প্রতিনিধি বানিয়ে পাঠালেন , তার পরিবর্তে আমরা মানুষের গোলামী করছি,
পুশকে যেমন মানুষ তার প্রয়োজনে ব্যবহার করে, তেমনি ভাবে আজ আমরা বিংশ শতাব্দিতে, দাস
সমাজের মত মানুষের গোলামী করছি। আর দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও রক্তপাত ঘটাচ্ছি, আমরা কি ভেবে
দেখেছি কাদের বঞ্চিত করছি, কাদের সাথে দাঙ্গা করছি, ও কাকে হত্যা করছি ? এরই জ্বলন্ত
দৃষ্টান্ত দিয়েছে...
সরৎচন্দ্র তার
শ্রিকান্ত উপন্যাসে তৃতীয় খন্ডে এই উক্তি বাঙালীদের জন্য বলেছেন, “কিন্তু এই যে সমাজ হইতে , গৃহ হইতে, সর্বপ্রকার সামাজিক বন্ধন
হইতে বিচ্ছিন্ন করিয়া লোকগুলোকে কেবল মাত্র মাটি-কাটিবার জন্যই সংগ্রহ করিয়া আনিয়া
ট্রাকের উপর জমা করা হইয়াছে, এইখানেই তাহাদের মানব হৃদয়-বৃত্তি বলিয়া আর কোথাও কিছু
বাকী নাই ! শুধু মাটি-কাটা, শুধু মজুরি। সভ্য
মানুষে এ কথা বোধ হয় ভালো করিয়া বুঝিয়া লইয়াছে, মানুষকে পশু করিয়া না লইতে পারিলে,
পশুর কাজ আদায় করা যায় না।”
لَّقَدْ كَانَ
لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِّمَن كَانَ يَرْجُو اللَّهَ
وَالْيَوْمَ الْآخِرَ وَذَكَرَ اللَّهَ كَثِيرًا [٣٣:٢١]
যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ
করে, তাদের জন্যে
রসূলুল্লাহর মধ্যে উত্তম নমুনা রয়েছে।(৩৩.সুরা:আহাজাব, আয়াত:২১)
মুর্খ দের ধর্ম সম্পর্কে আল্লাহ যা বলেছেন… সূরা বাকারা ৭৮আয়াতে,
وَإِذَا لَقُوا
الَّذِينَ آمَنُوا قَالُوا آمَنَّا وَإِذَا خَلَا بَعْضُهُمْ إِلَىٰ بَعْضٍ
قَالُوا أَتُحَدِّثُونَهُم بِمَا فَتَحَ اللَّهُ عَلَيْكُمْ لِيُحَاجُّوكُم بِهِ
عِندَ رَبِّكُمْ ۚ أَفَلَا
تَعْقِلُونَ [٢:٧٦]
৭৬.যখন তারা মুসলমানদের সাথে মিলিত হয়, তখন বলেঃ আমরা মুসলমান হয়েছি। আর যখন
পরস্পরের সাথে নিভৃতে অবস্থান করে, তখন বলে, পালনকর্তা তোমাদের জন্যে যা প্রকাশ
করেছেন, তা কি তাদের কাছে
বলে দিচ্ছ? তাহলে যে তারা এ
নিয়ে পালকর্তার সামনে তোমাদেরকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করবে। তোমরা কি তা উপলব্ধি কর
না?
أَوَلَا
يَعْلَمُونَ أَنَّ اللَّهَ يَعْلَمُ مَا يُسِرُّونَ وَمَا يُعْلِنُونَ [٢:٧٧]
৭৭.তারা কি এতটুকুও জানে না যে, আল্লাহ সেসব বিষয়ও পরিজ্ঞাত যা তারা
গোপন করে এবং যা প্রকাশ করে?
وَمِنْهُمْ
أُمِّيُّونَ لَا يَعْلَمُونَ الْكِتَابَ إِلَّا أَمَانِيَّ وَإِنْ هُمْ إِلَّا
يَظُنُّونَ [٢:٧٨]
৭৮.তোমাদের কিছু লোক নিরক্ষর। তারা মিথ্যা আকাঙ্খা ছাড়া
আল্লাহর গ্রন্থের কিছুই জানে না। তাদের কাছে কল্পনা ছাড়া কিছুই নেই।
فَوَيْلٌ
لِّلَّذِينَ يَكْتُبُونَ الْكِتَابَ بِأَيْدِيهِمْ ثُمَّ يَقُولُونَ هَٰذَا مِنْ
عِندِ اللَّهِ لِيَشْتَرُوا بِهِ ثَمَنًا قَلِيلًا ۖ فَوَيْلٌ
لَّهُم مِّمَّا كَتَبَتْ أَيْدِيهِمْ وَوَيْلٌ لَّهُم مِّمَّا يَكْسِبُونَ [٢:٧٩]
৭৯.অতএব তাদের জন্যে আফসোস! যারা নিজ হাতে গ্রন্থ লেখে এবং
বলে, এটা আল্লাহর পক্ষ
থেকে অবতীর্ণ-যাতে এর বিনিময়ে সামান্য অর্থ গ্রহণ করতে পারে। অতএব তাদের প্রতি আক্ষেপ, তাদের হাতের লেখার জন্য এবং তাদের প্রতি
আক্ষেপ, তাদের উপার্জনের
জন্যে।
মানুষের জন্য আল্লাহর আদেশ, সুরা বাকারা থেকে....
وَإِذْ
أَخَذْنَا مِيثَاقَ بَنِي إِسْرَائِيلَ لَا تَعْبُدُونَ إِلَّا اللَّهَ
وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا وَذِي الْقُرْبَىٰ وَالْيَتَامَىٰ وَالْمَسَاكِينِ
وَقُولُوا لِلنَّاسِ حُسْنًا وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ ثُمَّ
تَوَلَّيْتُمْ إِلَّا قَلِيلًا مِّنكُمْ وَأَنتُم مُّعْرِضُونَ [٢:٨٣]
যখন আমি বনী-ইসরাঈলের কাছ থেকে অঙ্গীকার নিলাম যে, তোমরা আল্লাহ ছাড়া কারও উপাসনা করবে না, পিতা-মাতা, আত্নীয়-স্বজন, এতীম ও
দীন-দরিদ্রদের সাথে সদ্ব্যবহার করবে, মানুষকে সৎ
কথাবার্তা বলবে, নামায প্রতিষ্ঠা
করবে এবং যাকাত দেবে, তখন সামান্য
কয়েকজন ছাড়া তোমরা মুখ ফিরিয়ে নিলে, তোমরাই
অগ্রাহ্যকারী।
وَإِذْ
أَخَذْنَا مِيثَاقَكُمْ لَا تَسْفِكُونَ دِمَاءَكُمْ وَلَا تُخْرِجُونَ أَنفُسَكُم
مِّن دِيَارِكُمْ ثُمَّ أَقْرَرْتُمْ وَأَنتُمْ تَشْهَدُونَ [٢:٨٤]
যখন আমি তোমাদের কাছ থেকে অঙ্গীকার নিলাম যে, তোমরা পরস্পর খুনাখুনি করবে না এবং নিজেদেরকে দেশ থেকে
বহিস্কার করবে না, তখন তোমরা তা
স্বীকার করেছিলে এবং তোমরা তার সাক্ষ্য দিচ্ছিলে।
ثُمَّ أَنتُمْ
هَٰؤُلَاءِ تَقْتُلُونَ أَنفُسَكُمْ وَتُخْرِجُونَ فَرِيقًا مِّنكُم مِّن
دِيَارِهِمْ تَظَاهَرُونَ عَلَيْهِم بِالْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ وَإِن يَأْتُوكُمْ
أُسَارَىٰ تُفَادُوهُمْ وَهُوَ مُحَرَّمٌ عَلَيْكُمْ إِخْرَاجُهُمْ ۚ
أَفَتُؤْمِنُونَ بِبَعْضِ الْكِتَابِ وَتَكْفُرُونَ بِبَعْضٍ ۚ فَمَا جَزَاءُ
مَن يَفْعَلُ ذَٰلِكَ مِنكُمْ إِلَّا خِزْيٌ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا ۖ وَيَوْمَ
الْقِيَامَةِ يُرَدُّونَ إِلَىٰ أَشَدِّ الْعَذَابِ ۗ وَمَا اللَّهُ
بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُونَ [٢:٨٥]
অতঃপর তোমরাই পরস্পর খুনাখুনি করছ এবং তোমাদেরই একদলকে
তাদের দেশ থেকে বহিস্কার করছ। তাদের বিরুদ্ধে পাপ ও অন্যায়ের মাধ্যমে আক্রমণ করছ।
আর যদি তারাই কারও বন্দী হয়ে তোমাদের কাছে আসে, তবে বিনিময় নিয়ে তাদের মুক্ত করছ। অথচ তাদের বহিস্কার করাও
তোমাদের জন্য অবৈধ। তবে কি তোমরা গ্রন্থের কিয়দংশ বিশ্বাস কর এবং কিয়দংশ
অবিশ্বাস কর? যারা এরূপ করে
পার্থিব জীবনে দূগর্তি ছাড়া তাদের আর কোনই পথ নেই। কিয়ামতের দিন তাদের কঠোরতম
শাস্তির দিকে পৌঁছে দেয়া হবে। আল্লাহ তোমাদের কাজ-কর্ম সম্পর্কে বে-খবর নন।
أُولَٰئِكَ
الَّذِينَ اشْتَرَوُا الْحَيَاةَ الدُّنْيَا بِالْآخِرَةِ ۖ فَلَا
يُخَفَّفُ عَنْهُمُ الْعَذَابُ وَلَا هُمْ يُنصَرُونَ [٢:٨٦]
এরাই পরকালের বিনিময়ে পার্থিব জীবন ক্রয় করেছে। অতএব এদের
শাস্তি লঘু হবে না এবং এরা সাহায্যও পাবে না।
সত্যের
বাণী মানুষের কাছে আসলে মানুষ যে কাজটাই করে...সুরা বাকারা থেকে.....
وَلَقَدْ
آتَيْنَا مُوسَى الْكِتَابَ وَقَفَّيْنَا مِن بَعْدِهِ بِالرُّسُلِ ۖ وَآتَيْنَا
عِيسَى ابْنَ مَرْيَمَ الْبَيِّنَاتِ وَأَيَّدْنَاهُ بِرُوحِ الْقُدُسِ ۗ أَفَكُلَّمَا
جَاءَكُمْ رَسُولٌ بِمَا لَا تَهْوَىٰ أَنفُسُكُمُ اسْتَكْبَرْتُمْ فَفَرِيقًا
كَذَّبْتُمْ وَفَرِيقًا تَقْتُلُونَ [٢:٨٧]
অবশ্যই আমি মূসাকে কিতাব দিয়েছি। এবং তার পরে পর্যায়ক্রমে
রসূল পাঠিয়েছি। আমি মরিয়ম তনয় ঈসাকে সুস্পষ্ট মোজেযা দান করেছি এবং পবিত্র রূহের
মাধ্যমে তাকে শক্তিদান করেছি। অতঃপর যখনই কোন রসূল এমন নির্দেশ নিয়ে তোমাদের
কাছে এসেছে, যা তোমাদের মনে
ভাল লাগেনি, তখনই তোমরা
অহংকার করেছ। শেষ পর্যন্ত তোমরা একদলকে মিথ্যাবাদী বলেছ এবং একদলকে হত্যা করেছ।
وَقَالُوا
قُلُوبُنَا غُلْفٌ ۚ بَل
لَّعَنَهُمُ اللَّهُ بِكُفْرِهِمْ فَقَلِيلًا مَّا يُؤْمِنُونَ [٢:٨٨]
তারা বলে, আমাদের হৃদয়
অর্ধাবৃত। এবং তাদের কুফরের কারণে আল্লাহ অভিসম্পাত করেছেন। ফলে তারা অল্পই ঈমান
আনে।
وَلَمَّا
جَاءَهُمْ كِتَابٌ مِّنْ عِندِ اللَّهِ مُصَدِّقٌ لِّمَا مَعَهُمْ وَكَانُوا مِن
قَبْلُ يَسْتَفْتِحُونَ عَلَى الَّذِينَ كَفَرُوا فَلَمَّا جَاءَهُم مَّا عَرَفُوا
كَفَرُوا بِهِ ۚ فَلَعْنَةُ
اللَّهِ عَلَى الْكَافِرِينَ [٢:٨٩]
যখন তাদের কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে কিতাব এসে পৌঁছাল, যা সে বিষয়ের সত্যায়ন করে, যা তাদের কাছে রয়েছে এবং তারা পূর্বে
করত। অবশেষে যখন তাদের কাছে পৌঁছল যাকে তারা চিনে রেখেছিল, তখন তারা তা অস্বীকার করে বসল। অতএব, অস্বীকারকারীদের উপর আল্লাহর অভিসম্পাত।
بِئْسَمَا
اشْتَرَوْا بِهِ أَنفُسَهُمْ أَن يَكْفُرُوا بِمَا أَنزَلَ اللَّهُ بَغْيًا أَن
يُنَزِّلَ اللَّهُ مِن فَضْلِهِ عَلَىٰ مَن يَشَاءُ مِنْ عِبَادِهِ ۖ فَبَاءُوا
بِغَضَبٍ عَلَىٰ غَضَبٍ ۚ وَلِلْكَافِرِينَ عَذَابٌ مُّهِينٌ [٢:٩٠]
যার বিনিময়ে তারা নিজেদের বিক্রি করেছে, তা খুবই মন্দ; যেহেতু তারা আল্লাহ যা নযিল করেছেন, তা অস্বীকার করেছে এই হঠকারিতার দরুন যে, আল্লাহ স্বীয় বান্দাদের মধ্যে যার প্রতি ইচ্ছা অনুগ্রহ
নাযিল করেন। অতএব, তারা ক্রোধের উপর
ক্রোধ অর্জন করেছে। আর কাফেরদের জন্য রয়েছে অপমানজনক শাস্তি।
وَإِذَا قِيلَ
لَهُمْ آمِنُوا بِمَا أَنزَلَ اللَّهُ قَالُوا نُؤْمِنُ بِمَا أُنزِلَ عَلَيْنَا
وَيَكْفُرُونَ بِمَا وَرَاءَهُ وَهُوَ الْحَقُّ مُصَدِّقًا لِّمَا مَعَهُمْ ۗ قُلْ فَلِمَ
تَقْتُلُونَ أَنبِيَاءَ اللَّهِ مِن قَبْلُ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ [٢:٩١]
যখন তাদেরকে বলা হয়, আল্লাহ যা
পাঠিয়েছেন তা মেনে নাও, তখন তারা বলে, আমরা মানি যা আমাদের প্রতি অবর্তীণ
হয়েছে। সেটি ছাড়া সবগুলোকে তারা অস্বীকার করে। অথচ এ গ্রন্থটি সত্য এবং সত্যায়ন
করে ঐ গ্রন্থের যা তাদের কাছে রয়েছে। বলে দিন, তবে তোমরা ইতিপূর্বে পয়গম্বরদের হত্যা করতে কেন যদি তোমরা
বিশ্বাসী ছিলে?
যাদু বিদ্যা সম্পর্কে… সুরা বাকারা থেকে………..
وَاتَّبَعُوا
مَا تَتْلُو الشَّيَاطِينُ عَلَىٰ مُلْكِ سُلَيْمَانَ ۖ وَمَا كَفَرَ
سُلَيْمَانُ وَلَٰكِنَّ الشَّيَاطِينَ كَفَرُوا يُعَلِّمُونَ النَّاسَ السِّحْرَ
وَمَا أُنزِلَ عَلَى الْمَلَكَيْنِ بِبَابِلَ هَارُوتَ وَمَارُوتَ ۚ وَمَا
يُعَلِّمَانِ مِنْ أَحَدٍ حَتَّىٰ يَقُولَا إِنَّمَا نَحْنُ فِتْنَةٌ فَلَا
تَكْفُرْ ۖ
فَيَتَعَلَّمُونَ مِنْهُمَا مَا يُفَرِّقُونَ بِهِ بَيْنَ الْمَرْءِ وَزَوْجِهِ ۚ وَمَا هُم
بِضَارِّينَ بِهِ مِنْ أَحَدٍ إِلَّا بِإِذْنِ اللَّهِ ۚ
وَيَتَعَلَّمُونَ مَا يَضُرُّهُمْ وَلَا يَنفَعُهُمْ ۚ وَلَقَدْ
عَلِمُوا لَمَنِ اشْتَرَاهُ مَا لَهُ فِي الْآخِرَةِ مِنْ خَلَاقٍ ۚ وَلَبِئْسَ مَا
شَرَوْا بِهِ أَنفُسَهُمْ ۚ لَوْ كَانُوا يَعْلَمُونَ [٢:١٠٢]
তারা ঐ শাস্ত্রের অনুসরণ করল, যা সুলায়মানের রাজত্ব কালে শয়তানরা আবৃত্তি করত। সুলায়মান
কুফর করেনি; শয়তানরাই কুফর
করেছিল। তারা মানুষকে জাদুবিদ্যা এবং বাবেল শহরে হারুত ও মারুত দুই ফেরেশতার প্রতি
যা অবতীর্ণ হয়েছিল, তা শিক্ষা দিত।
তারা উভয়ই একথা না বলে কাউকে শিক্ষা দিত না যে, আমরা পরীক্ষার জন্য; কাজেই তুমি কাফের
হয়ো না। অতঃপর তারা তাদের কাছ থেকে এমন জাদু শিখত, যদ্দ্বারা স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে। তারা
আল্লাহর আদেশ ছাড়া তদ্দ্বারা কারও অনিষ্ট করতে পারত না। যা তাদের ক্ষতি করে এবং
উপকার না করে, তারা তাই শিখে।
তারা ভালরূপে জানে যে, যে কেউ জাদু
অবলম্বন করে, তার জন্য পরকালে
কোন অংশ নেই। যার বিনিময়ে তারা আত্নবিক্রয় করেছে, তা খুবই মন্দ যদি তারা জানত।
وَلَوْ
أَنَّهُمْ آمَنُوا وَاتَّقَوْا لَمَثُوبَةٌ مِّنْ عِندِ اللَّهِ خَيْرٌ ۖ لَّوْ كَانُوا
يَعْلَمُونَ [٢:١٠٣]
যদি তারা ঈমান আনত এবং খোদাভীরু হত, তবে আল্লাহর কাছ থেকে উত্তম প্রতিদান
পেত। যদি তারা জানত।
সুরা আস্ সূরা থেকে কিছু আয়াতের অর্থ:
১.ত্বা, সীন, মীম।
تِلْكَ آيَاتُ
الْكِتَابِ الْمُبِينِ [٢٦:٢]
২.এগুলো সুস্পষ্ট
কিতাবের আয়াত।
لَعَلَّكَ
بَاخِعٌ نَّفْسَكَ أَلَّا يَكُونُوا مُؤْمِنِينَ [٢٦:٣]
৩.তারা বিশ্বাস
করে না বলে আপনি হয়তো মর্মব্যথায় আত্নঘাতী হবেন।
إِن نَّشَأْ
نُنَزِّلْ عَلَيْهِم مِّنَ السَّمَاءِ آيَةً فَظَلَّتْ أَعْنَاقُهُمْ لَهَا
خَاضِعِينَ [٢٦:٤]
৪.আমি যদি ইচ্ছা
করি, তবে আকাশ থেকে তাদের কাছে কোন নিদর্শন
নাযিল করতে পারি। অতঃপর তারা এর সামনে নত হয়ে যাবে।
وَمَا
يَأْتِيهِم مِّن ذِكْرٍ مِّنَ الرَّحْمَٰنِ مُحْدَثٍ إِلَّا كَانُوا عَنْهُ
مُعْرِضِينَ [٢٦:٥]
৫.যখনই তাদের কাছে
রহমান এর কোন নতুন উপদেশ আসে, তখনই তারা তা
থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
فَقَدْ
كَذَّبُوا فَسَيَأْتِيهِمْ أَنبَاءُ مَا كَانُوا بِهِ يَسْتَهْزِئُونَ [٢٦:٦]
৬.অতএব তারা তো
মিথ্যারোপ করেছেই; সুতরাং যে বিষয় নিয়ে তারা ঠাট্টা-বিদ্রুপ
করত, তার যথার্থ স্বরূপ শীঘ্রই তাদের কাছে
পৌছবে।
أَوَلَمْ
يَرَوْا إِلَى الْأَرْضِ كَمْ أَنبَتْنَا فِيهَا مِن كُلِّ زَوْجٍ كَرِيمٍ [٢٦:٧]
৭.তারা কি
ভুপৃষ্ঠের প্রতি দৃষ্টিপাত করে না? আমি তাতে সর্বপ্রকার বিশেষ-বস্তু কত উদগত করেছি।
إِنَّ فِي
ذَٰلِكَ لَآيَةً ۖ وَمَا كَانَ
أَكْثَرُهُم مُّؤْمِنِينَ [٢٦:٨]
৮.নিশ্চয় এতে
নিদর্শন আছে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়।
وَإِنَّ رَبَّكَ
لَهُوَ الْعَزِيزُ الرَّحِيمُ [٢٦:٩]
৯.আপনার পালনকর্তা
তো পরাক্রমশালী পরম দয়ালু।